আমি মোঃ উজ্জল হোসেন ও আমার স্ত্রী সুমাইয়া সুলতানা।আমাদের বিবাহ হয় ২০১৯ সালে ডিসেম্বর মাসের ২৭ তারিখ রোজ শুক্রবার।
এসবি মুগ্ধ এর জন্মঃ
মুগ্ধের জন্মের আগেই ডাক্তার বলেছিলো নরমালে জন্ম গ্রহনের মুগ্ধর সমস্যা হতে পারে। তাই পরিকল্পনা করে ০১/০৮/২০২৪ তারিখ সুমাইয়া সুলতানাকে মহেশপুর নার্সিং হোম নামের এক ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয় সকাল ১১ টার দিকে। সেখানে আসাদুসজ্জামান ডাক্তার এর সাহায্যে সুমাইয়াকে অপারেশন করে ১:০৫ মিনিটে মুগ্ধকে অপারেশন থিয়টর থেকে বাহিরে বের করে নিয়ে আসা হয়।
এসবি মুগ্ধ এর নামকরনঃ
মুগ্ধের জন্মের পর থেকেই বিভিন্ন নাম রাখা শুরু হলেও আমি তার বাবা সবাইকেই বলি যার যা ইচ্ছা সে তাই নাম রাখুক। শুধু মাত্র আমার বাবুর নাম খাতা কলমে আমিই ঠিক করবো।
প্রথম বাবুর জন্মের আগে থেকেই আমি ভাবতাম এমন একটি নাম রাখা উচিত যা সাধারনত মানুষ খুব কম শুনে থাকে। যা আমার বাবুর নাম ইউনিক হবে বলে আমি মনে করি।
কিন্তু বাবুর জন্মের আগেই আমি কোটা আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে যায়। এবং থানায় আমি ১ নং তালিকায় অর্ন্তরভূক্ত হয়ে পরি। আমার ছাত্র ৫ জনকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। ১৮ জুলাই ২০২৪ তারিখেই আমি বাড়ি থেকে বাহিরে অবস্থান করি। এই দিনে বাংলাদেশে অনেকেই মারা যায় পুলিশের গুলিতে। তার মধ্যে মুগ্ধ নামের একটি ছেলে ছিল। যে সবার জন্য পানির ব্যবস্থা করেছে এবং বলেছে “পানি লাগবে - পানি” । পরবর্তীতে ০৫ ই আগস্ট সৈরাচারী শেখ হাসিনা পালিয়ে যায়। এবং আমরা মনে করি আমাদের দেশ ২য় বারের মত স্বাধীন হয়। এই ঘটনা ও মুগ্ধ নামের ছেলেকে যাতে ভুলে না যায় তারই কারণে আমার বাবুর নাম রাখি এসবি মুগ্ধ। যার মানে স্বাধীন বাংলার মুগ্ধ।
২০২৪ সালে কোটা আন্দোলনে যোগদান রত মুগ্ধের জীবনের ইতিহাস:
শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ছিলেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী।[১] তিনি একজন মুক্তপেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও কাজ করতেন। আন্দোলনের সময় খাবার পানি এবং বিস্কুট বিতরণ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। মুগ্ধর মৃত্যু কোটা সংস্কার আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে।[২] ‘‘ ভাই পানি লাগবে কারও, পানি ’’ - মুগ্ধের এ কথাটি এখনো সারা বাংলাদেশকে কাদাঁয়।
মুগ্ধর বাবার নাম মীর মোস্তাফিজুর রহমান, মায়ের নাম শাহানা চৌধুরী।[৩] তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও মুগ্ধ ছিলেন যমজ।[৪]
মুগ্ধ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ঢাকা শহরে অবস্থিত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এ প্রফেশনাল এমবিএ করছিলেন। মৃত্যুর সময়ও তার গলায় বিইউপি আইডি কার্ডটি রক্তমাখা অবস্থায় ছিল।
তিনি একজন ফ্রিল্যান্সার ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফাইভারে তিনি এক হাজারের অধিক কাজ সম্পন্ন করেছেন।[৫] ফ্রিল্যান্সিং এর পাশাপশি তিনি একজন ভ্রমণপিপাসু, ফুটবলার এবং বাংলাদেশ স্কাউটসের সদস্য ছিলেন।[৬]
মুগ্ধর কাজের প্রশংসা করে ফাইভার বুধবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় তাদের ভেরিফাইড অফিশিয়াল পোস্টের মাধ্যমে জানায়, মুগ্ধ ছিল একজন প্রতিভাবান মার্কেটার। বিশেষ করে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (সিইও) এবং সোশ্যাল মিডিয়া বিষয়ে তার অসাধারণ দক্ষতা ছিল।
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই সন্ধ্যার সময়[৭] ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষ চলাকালীন মুগ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।[৮] তার মৃত্যুর পরপরই একটি ছোট ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যেটি পোস্ট করেছিলেন তার যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। ফাইভার তার মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করেছে।[৯]
0 Comments